উঠোন পেরিয়ে আফ্রিকা - পর্ব ৪: কারিবুনি লুসোটো | তানজানিয়া ভ্রমণ
পর্ব ৪

।।।। উঠোন পেরিয়ে আফ্রিকা ।।।।

কারিবুনি লুসোটো - উসাম্বারা পর্বতের স্বর্গে স্বাগতম

#তানজানিয়ার_দিনরাত্রি #ভ্রমণকাহিনী #লুসোটো #উসাম্বারা_পর্বত #জার্মান_স্থাপত্য

আমরা লুসোটো (Lushoto) যাবো। জায়গার নামের মাঝেই মনে হচ্ছে অন্যরকম কিছু লুকিয়ে আছে। অনেক তো একদিনের বেড়ানো হলো, আমরা এক রাত থাকবো সেখানে! আমার বেশ ভালোই লাগছে, অনেকদিন পর লাগেজ গুছাবো। অনেকদিন পর মানে এই ধরুন পাঁচ সপ্তাহ পর। পাঁচ সপ্তাহ আগে তো দেশ থেকেই প্যাকেট হয়ে আসলাম। লুসোটো তানজানিয়ার টাঙ্গা রিজনের একটি জেলা, কেনিয়ার বর্ডারের একদম কাছে।

লুসোটো সম্পর্কে

লুসোটো তানজানিয়ার উসাম্বারা পর্বতের একটি সুন্দর শহর, সমুদ্র সমতল থেকে আনুমানিক ৪,২০০ ফুট উপরে অবস্থিত। জার্মান ঔপনিবেশিক সময়ে এটি 'উইলহেল্মস্টল' (Wilhelmstal) নামে পরিচিত ছিল। এর শীতল আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এটি 'তানজানিয়ার নরওয়ে' নামে পরিচিত।

লুসোটো পাহাড়ী এলাকা, আমাদের নীলগিরি যেমন। তাহলে দাঁড়াচ্ছে আমরা আরুশা মানে চট্টগ্রাম থেকে লুসোটো মানে নীলগিরি যাচ্ছি। শনিবার খুব সকালে রওনা হওয়ার পরিকল্পনা হলো। কিন্তু আগের ম্যানিয়ারা ন্যাশনাল পার্ক ট্রিপে মনে হয়েছিল আমরা যথেষ্ট খাবার নেই নাই, তাই এই ট্রিপে অনেক খাবার নিয়ে যাবার কথা সোহান বারবার বলছিল। ভোরে ঘুম থেকে উঠে তাই রান্নাবান্না করে বক্স করে নিলাম, বাসায় যা যা ফলমূল ছিল, সব নেওয়া হলো। সোহান ফ্রিজ খুঁজে যা যা পেয়েছে, ব্যাগে ঢুকিয়েছে, ভাব সাব দেখে মনে হচ্ছে এক সপ্তাহের ট্রিপে যাচ্ছি। আমার লেখার প্রথম পর্বে বলেছিলাম, সাংসারিক জীবনের এই বারো বছরে এসে, আমরা একেঅপরের বোকাসোকা কাজ বেশী ঘাটাই না। নয়তো এখানে বলেই ফেলতাম,'আগামীকালই তো ফিরে আসছি ফ্রিজ খালি করতেছ কেন?' তারপর আধা ঘন্টার একটা হাঙ্গামা লেগে যেত। এর থেকে মনে মনে এইসব নিয়ে তর্ক বিতর্ক করাই ভালো।

যাত্রা শুরু: আরুশা থেকে লুসোটোর পথে

সকাল ৮.৪০ এর দিকে বাসা থেকে বের হতে পারলাম। বাসা থেকে বের হয়েই সোহানের মনে হলো গাড়িতে তেল নিতে হবে, গুগল মামা জানিয়েছে ৬ ঘন্টার ড্রাইভ। আমাদের সে ভিলেজ সুপারমার্কেট থেকে আরো কিছু খাবার কিনতে বলে গাড়িতে তেল ভরতে গেল। চকলেট, চিপস, ক্রোসেন্ট কিনে গাড়ি খাবারে পরিপূর্ণ করে আমরা যাত্রা শুরু করলাম।

[এখানে যাত্রাপথের প্রস্তুতির ছবি যোগ করা যেতে পারে - গাড়িতে খাবার ও প্রস্তুতি] যাত্রাপথের প্রস্তুতি যাত্রাপথের প্রস্তুতি (প্রতীকী ছবি)

পরিবারের সাথে ভ্রমণের কৌশল

ছোট বাচ্চাদের সাথে দীর্ঘ ভ্রমণে প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত খাবার, পানীয়, বিনোদনের উপকরণ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখা উচিত। আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাচ্চাদের জন্য অতিরিক্ত স্ন্যাক্স এবং তাদের পছন্দের খাবার সঙ্গে রাখলে যাত্রা অনেক সহজ হয়ে যায়।

আমরা মোসির দিকে যাচ্ছি, রাস্তায় কিছুদূর পরপর সে জায়গার নামসহ ফলক লাগানো রয়েছে। আবার সে এলাকা যখন শেষ হয় তখন নামের উপর ক্রস দিয়ে ফলক লাগানো। আমরা এয়ারপোর্ট রোডে চলে আসলাম। আমরা তানজানিয়াতে প্রথমদিন এসেছিলাম কিলিমাঞ্জারো এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে তাই প্রতিবার যাওয়ার সময় প্রথম দিনের কথা মনে হয়। ১১ মাসের জন্য এতদিনের সংসার প্যাক করে, অজানা গন্তব্যের উৎকণ্ঠা আর ২৪ ঘন্টার জার্নি শেষে খুবই বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলাম। এয়ারপোর্ট থেকে আরুশায় যাওয়ার রাস্তা সীমাহীন দীর্ঘ মনে হচ্ছিল। এরপর পুনরায় যতবার এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে যাই প্রতিবার তানজানিয়ার আকাশ, গাছপালা, মাঠ, রাস্তা, রাস্তার পাশের দোকান, মানুষ প্রথমবার দেখার অনুভূতি অনুভব করতে পারি।

যাত্রাপথের অভিজ্ঞতা: বাচ্চা এবং কিলিমাঞ্জারো

এরমাঝে ছোট মেয়ে গাড়িতে বমি করে দিল। একপাশে গাড়ি থামিয়ে তাকে পরিস্কার করা হলো। আট আর বারো বছরের দুটো বাচ্চাকে গাড়িতে পেছনে বসিয়ে ভ্রমণ করা সবসময় খুব সহজ নয়। তারা ঝগড়া করে, তারা ছোট ছোট পোকা দেখে ভয় পায়, মোবাইল দেখতে চায়, একজন মোবাইল নিতে পারলে আরেকজন না পেলে কান্না করে। মা হিসাবে নিজেকে সবসময় নাদান লাগে। সোহানের কথা আর না বলি, সেও তার বাচ্চাদের থেকে কম কিছু নয়।

আজকে আমরা আরুশা থেকে মোসি হয়ে কিলিমাঞ্জারো রিজন পাড়ি দিয়ে টাঙ্গায় যাবো। অনেকক্ষণ ড্রাইভ করতে হবে সোহানকে। সৌভাগ্য যে সোহান ড্রাইভিং পছন্দ করে; নয়তো প্রতি সপ্তাহে এত বেড়ানো আমাদের হতো না। প্রতিবার মোসির হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। কিলিমাঞ্জারো যদি দেখা যায়। সেদিনও আকাশ পরিস্কার ছিল না, তাই কিলিমাঞ্জারো দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু পথ চলতে চলতে হঠাৎ সেবন্তি চিৎকার, 'বাবা ওটা কি কিলিমাঞ্জারো!!' তখনই রাস্তার পাশে বড় বড় গাছপালা শুরু হয়ে গেলো, সে কারণে সেবন্তি যা দেখেছে আমরা তা দেখতে পারছিলাম না। কই কই করতে করতে আমরা শেষ পর্যন্ত একটু ফাঁকা জায়গা পেলাম আকাশ দেখার। আকাশে মেঘের মাঝে মিশে থাকা শুধু কিলিমাঞ্জেরোর চূড়াটা দেখা গেলো, তাতেই আমরা বিস্মিত, খুব আনন্দিত হয়ে গেলাম।

[এখানে কিলিমাঞ্জারোর ছবি যোগ করা যেতে পারে] মেঘের আড়ালে কিলিমাঞ্জারো মেঘের আড়ালে উঁকি দিচ্ছে কিলিমাঞ্জারোর চূড়া

সাইসলের প্রান্তর: লাল মাটির সৌন্দর্য

মোসি এলাকা পেরিয়ে আমরা কিলিমাঞ্জারো রিজন দিয়ে যাচ্ছি। বামদিকে পর্বত আর ডান দিকে বিস্তীর্ণ খোলা প্রান্তর। প্রান্তরের শেষে পাহাড় দেখা যায়। একটা দীর্ঘ সোজা রাস্তা দিয়ে আমরা চলছি। গুগল মামা জানাচ্ছে আমাদের পরবর্তী টার্ন ১১৭ কিমি পর। দিনের ঝকঝকে আলোতে নির্জন রাস্তায় শুধু আমাদের গাড়ি, সামনে বা পেছনে যতদূর চোখ যায় আর কোন গাড়ি নেই। দৃশ্যটা কল্পনা করা যায় কি, রাস্তায় আর একটাও গাড়ি নাই, হলিউড সিনেমাগুলোতে উপর থেকে শট দেখায় না, দুপাশে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ; দিগন্তে মিলিয়ে যাওয়া রাস্তায় নায়ক গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নায়ক বউ বাচ্চাসহ যাচ্ছে।

ঐতিহাসিক তথ্য

লুসোটো জার্মান কলোনিয়াল সময়ে 'উইলহেল্মস্টল' (Wilhelmstal) নামে পরিচিত ছিল। এর আবহাওয়া অনেকটা ইউরোপের মতো ঠান্ডা হওয়ায় জার্মান ঔপনিবেশিকদের কাছে এটি খুব জনপ্রিয় ছুটির গন্তব্য ছিল। জার্মানরা এখানকার পাহাড়ি রাস্তাগুলো তৈরি করেছিল যা এখনও ব্যবহার করা হয়।

গন্তব্য যত কাছে চলে আসছিল, চারপাশ তত বেশী সুন্দর হয়ে যাচ্ছিল। রাস্তার দুপাশে সাইসল গাছের চাষ করা। আমাদের পাটের মতো সাইসল এই এলাকার অর্থকরী ফসল। সাইসলের পাতা দিয়ে দড়ি, সুতা উৎপন্ন হয়। যা দিয়ে বানানো হয় ব্যাগ, মাদুর, কাপড় নানাকিছু। আমি আসলে বেশিরভাগ সময় মুগ্ধ হয়ে চারপাশ দেখছিলাম। ছবি তোলার ইচ্ছা হচ্ছিল না। কারণ ছবিতে এই অপার সৌন্দর্য্যের কিছুই আসছিল না। দূরে মনে হচ্ছিল পাহাড়ের পাশে সবুজের মাঝে লাল কোন ফসলের মাঠ। পরে দেখা গেল ওই অংশের মাটিই লাল। দূর থেকে এত সুন্দর লাগছিল।

সাইসল সম্পর্কে মজার তথ্য

সাইসল (Sisal) Agave গোত্রের একটি উদ্ভিদ। ১৯-শতকের শেষের দিকে জার্মানরা তানজানিয়ায় এটি নিয়ে আসে। বর্তমানে তানজানিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইসল উৎপন্নকারী দেশ। এটি পরিবেশবান্ধব আঁশ বা ফাইবারের উৎস যা দড়ি, কার্পেট এবং বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

[এখানে সাইসল ফার্মের ছবি যোগ করা যেতে পারে] সাইসল ফার্ম তানজানিয়ার সাইসল চাষ (প্রতীকী ছবি)

আমরা বামপাশের পাহাড়গুলোর কাছে চলে আসছিলাম। সোহান বললো এই পাহাড়েই আবার আমরা উঠবো। লুশোটো পাহাড়ের উপরের শহর। স্থানীয়রা এটার নাম দিয়েছে তানজানিয়ার নরওয়ে।

পাহাড়ের বাঁক: জার্মানদের তৈরি রাস্তা

টাঙ্গা পৌঁছে আমরা বামদিকের রাস্তায় গাড়ি ঘুরালাম। বামের যেই পাহাড়্গুলো এতক্ষন দেখছিলাম, এখন সেই পাহাড়ের উপর উঠছি। পাহাড়ের এই রাস্তাগুলো জার্মান কলোনিয়াল সময়ে বানানো। পাহাড়ের উপরে উঠছি আর নিচে দেখছি কিছুক্ষণ আগে ফেলে আসা শহর আর একাকী নিঃসঙ্গ সেই দীর্ঘ রাস্তাটাকে। কত শত বছরের পুরানো পাথরের পাহাড়ের মাঝ দিয়ে চলছি। এই এলাকায় একসময় জার্মানরা নিয়ন্ত্রণ করেছে। জার্মান চলে যাওয়ার সময় ব্রিটিশদের হাতে দিয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল ওই সময়টাকে দেখতে পাচ্ছিলাম। লুসোটো শহরটা সমুদ্র সমতল থেকে আনুমানিক ৪-৫ হাজার ফুট উপড়ে। রাস্তার পাশে অনেক বড় বড় ইউক্যালিপটাস গাছ। প্রায় ৩০ মিনিট আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ শেষে আমরা গন্তব্যে পৌছালাম।

[এখানে পাহাড়ি রাস্তার ছবি যোগ করা যেতে পারে] পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা জার্মানদের তৈরি পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ

দ্য লন হোটেল: জার্মান স্থাপত্যের নিদর্শন

আমরা উঠেছি দি লন হোটেলে (The Lawn Hotel)। এটা আগে জার্মানদের বাসা বাড়ি ছিল। পরে এটাকে হোটেল বানানো হয়। রিসিপশন থেকে আমাদের রুমে নিয়ে গেল, আমাদের বুকিং দেওয়া রুমের সামনে। দেয়াল ছেয়ে সবুজ লতানো গাছের মাঝে আমাদের রুমে ঢুকার রাস্তা। বড় একটা রুম, মাঝখানে বড় কাঠের খাট, একপাশের কর্নারে দোতলা খাট, ফায়ারপ্লেস আছে, যদিও সেটা ক্লোজড, দুটো জানালা, সেখান দিয়ে দেখা যাচ্ছে বাচ্চাদের খেলার মাঠ। যদিও রুমটা অন্ধকার, কিন্তু গন্ধ পাওয়া যায় ইতিহাসের। সোহান এটা এগোডা থেকে বুক করেছিল; রুম ভাড়া ছিল ৮০ ডলারের মতো।

[হোটেলের বহিঃদৃশ্য] দ্য লন হোটেলের বহিঃদৃশ্য দ্য লন হোটেলের বহিঃদৃশ্য
[হোটেল রুমের ফায়ারপ্লেস] হোটেল রুমের ফায়ারপ্লেস হোটেল রুমের ফায়ারপ্লেস
"হোটেলের রিসেপশনে একজন গাইড চাইলো সোহান, যে আমাদের লুসোটো ঘুরিয়ে দেখাবে। সেবন্তি অবন্তি খুশি মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে, পিয়ানো বাজাচ্ছে, ছোট মেয়ে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ফিজাকে দেখানোর জন্য ছবি তুলছে, ভিডিও করছে।"

আমরা ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হলাম খাবারের খোঁজে আর হোটেল ঘুরেফিরে দেখার জন্য। এল শেপড নিচতলা বিন্ডিং, বড় ডাইনিং স্পেস, একপাশে কিচেন, ডাইনিং স্পেসের নিচে বেসমেন্টে ওয়াশরুম। সোহান খাবার অর্ডার করছিল। আমরা ঘুরে দেখছি। একটা রুমে পিয়ানো, বসার জায়গা, বিলিয়ার্ড খেলার রুম, একটা বার সাজানো রয়েছে নানারকমের ড্রিংক্স দিয়ে। দেয়ালের ছবিগুলো দেখতে দেখতে সোহান চলে আসলো খাবারের অর্ডার দিয়ে।

হোটেলের রিসেপশনে একজন গাইড চাইলো সোহান, যে আমাদের লুসোটো ঘুরিয়ে দেখাবে। সেবন্তি অবন্তি খুশি মনে ঘুরে বেড়াচ্ছে, পিয়ানো বাজাচ্ছে, ছোট মেয়ে তার বেস্ট ফ্রেন্ড ফিজাকে দেখানোর জন্য ছবি তুলছে, ভিডিও করছে। হোটেলের পেছনে খেলার মাঠে একটা নোটিশ লাগানো, তাতে লেখা খেলার মাঠ ব্যবহার করার জন্য ৩০০০ শিলিং লাগবে। আমার মেয়েরা অতি ভদ্র সেই লেখা দেখে তারা আর সেই মাঠে খেলবে না। আমি মনে মনে হাসছি, তারা সেখানে খেলতে চাইলে, আমি বা সোহান কখনোই না বলবো না। যদিও তারা পরের দিন আবিস্কার করেছে, এই ফি যারা হোটেলে থাকবে, তাদের জন্য নয়।

হোটেলে লাঞ্চ: পরিবারের সাথে ডাইনিং

এরমাঝে আমাদের ডাক পড়লো, আমাদের লাঞ্চ তৈরি হয়েছে। টেবিল ভর্তি খাবার। দুটো বার্গার সাথে চিপস(ফ্রেঞ্চ ফ্রাই), স্যান্ডুইচ সাথে চিপস, নাগেটস সাথে চিপস, ফ্রাইড রাইস, চিকেনের কারি। সেবন্তি বার্গার এক কামড় খেয়ে আর খাবে না, তার নজর ফ্রাইড রাইসের দিকে। অবন্তির খুব একটা আগ্রহ নাই খাবারের ব্যাপারে। চারপাশে অন্য খাবারের টেবিলে ইউরোপীয় টুরিস্ট ছিল, এশিয়ান মায়ের ইম্প্রেশন তাদের কাছে তো আমি খারাপ বানাতে পারি না, মেয়েকে খাবারের জন্য ধমকিয়ে, তারচেয়ে ভালো আমি চিপসগুলো প্যাক করে নিলাম, অবন্তি পরে ক্ষিদা লাগলে খেতে পারবে।

[এখানে দ্য লন হোটেলের ডাইনিং এরিয়া এবং পরিবেশের ছবি যোগ করা যেতে পারে]

আমাদের গাইড চলে আসছিল। আমরাও তৈরি হয়ে গেলাম এর পরের যাত্রার জন্য। আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে উসাম্বারা পর্বতের কিসাসা ঝর্ণা। আর আকাশের কাছাকাছি একটা ভিউ পয়েন্ট (নাম হচ্ছে ইরেন্তে), যেখান থেকে নিচের পৃথিবী দেখা যায়!! আজকের ভ্রমণ গল্প এতটুকুই থাকুক।

লুসোটো ভ্রমণ টিপস:

  • শীতের কাপড় সঙ্গে নিন - লুসোটো অন্যান্য এলাকার তুলনায় ঠান্ডা
  • গাড়িতে পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় রাখুন - দীর্ঘ যাত্রাপথে প্রয়োজন হবে
  • স্থানীয় গাইড নিন - তারা জার্মান স্থাপত্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জানাবে
  • দ্য লন হোটেলের মতো ঐতিহাসিক হোটেলে থাকার চেষ্টা করুন
  • ক্যামেরা সঙ্গে নিন - প্রাকৃতিক দৃশ্য অসাধারণ
  • সকাল সকাল রওনা দিন - পাহাড়ি রাস্তায় দিনের আলোতে চলা নিরাপদ
  • স্থানীয় সাইসল শিল্পের জিনিসপত্র দেখুন
  • ইরেন্তে ভিউপয়েন্ট না দেখে ফিরবেন না
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Scroll to Top