তানজানিয়া আফ্রিকার প্রাকৃতিক সম্পদ আর সৌন্দর্যে ভরপুর বিশাল একটি দেশ। কিলিমাঞ্জারো আর মাউন্ট মেরু আফ্রিকার বিশালতম এই দুই পর্বত মাত্র ৬৮ কি.মি দূরত্বে তানজানিয়ার ভৌগলিক সীমানার মাঝে রয়েছে। আমরা মাউন্ট মেরুর শহর আরুশায় ১১ মাস কাটানোর একটা সুযোগ পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। আমার কাছে আফ্রিকা মনে হয়েছে মানুষের ডিজিটাল উন্নতির স্পর্শবিহীন বিশুদ্ধ প্রকৃতি, যেখানে লম্বা একটা শ্বাস নেওয়া যায়। কিন্তু এখানে এসেও সোহান এত ব্যস্ত হয়ে পড়ে, সারাদিন একা একা সময়ই বেশি কাটাতে হয়। আর অপেক্ষা করতে থাকি সোহান কবে বাসায় থাকবে, দূরে কোথাও কবে যেতে পারবো।
তানজানিয়া সম্পর্কে
তানজানিয়া পূর্ব আফ্রিকার একটি দেশ যেখানে আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমাঞ্জারো অবস্থিত। দেশটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জাতীয় উদ্যান এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। আরুশা শহরটি মাউন্ট মেরুর পাদদেশে অবস্থিত এবং অনেক সাফারির প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে।
তানজানিয়ায় আসার পর প্রায় প্রতিদিনই আমি রাত চারটা/ সাড়ে চারটার পর থেকে জেগে থাকি। সোহান অফিস যায় সাড়ে ছয়টায় আবার সেবন্তির অনলাইন ক্লাসও সাড়ে ছয়টায়। বাংলাদেশের সাথে তানজানিয়ার সময়ের পার্থক্য ৩ ঘন্টা। সে হিসাবে ওখানে ক্লাশ শুরু হয় সাড়ে ৯টায় আর এখানে আমার মেয়ে ক্লাশে বসে সাড়ে ৬টায়। সেদিন রবিবার সোহানের অফিস না থাকলেও সেবন্তির স্কুল ছিল, তার ক্লাস টেস্ট চলছে। মেয়েকে স্কুলে বসানোর সময় মনে হচ্ছিল মাথা ব্যথা শুরু হবে আজকে। আমার মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, আজকে রবিবার এটাকে আমি কোন ভাবেই বাড়তে দিতে চাই না। চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলে হয়তো বাড়বে না, তাই আমি রেস্ট নিতে চাচ্ছিলাম কিছুক্ষণ। সাড়ে সাতটার দিকে দুধওয়ালা আসে, তাকে বিদায় করে আবার বিছানায় মাথা লাগালাম। এর মাঝে সেবন্তির ডাক, 'মা… মা'। তার পরীক্ষা শেষ হয়েছে, আমার ফোন লাগবে ছবি তুলে পাঠাবে। এসব করে ফ্রেশ একটা ঘুম কখনোই দিতে পারি না। আমি জানি বেশির ভাগ মায়েদেরই একই অবস্থা।
যাত্রা প্রস্তুতি: মাথাব্যথা সত্ত্বেও
সোহান ভোরে নামাজ পড়ার পর ঘুমিয়ে সাড়ে নয়টার দিকে উঠলো, ঘুম থেকে উঠেই, "চল যাই, যাবা না", তাড়া দেওয়া শুরু করলো। তাকে জানালাম আমাকে যদি ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে আমি কোথাও যেতে পারবো না। ছোট মেয়ে এখনো নাস্তা করেনি। সে আর ছোট মেয়ে যেন নিজ দায়িত্বে নাস্তা করে নেয়। "কোন সমস্যা নাই, আমি সব সামলিয়ে নিচ্ছি" বিশাল একটা ভাব নিয়ে আমাকে পাঠালো, একটা ন্যাপ নেওয়ার জন্য। ন্যাপ নিতে আসলেও কান ছিল রান্নাঘরে। তাদের ধুপধাপ শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। বেশিক্ষণ শুয়ে থাকতে না পেরে, উঠে এসে তাদের কর্মকান্ড দেখতে লাগলাম। আমি গিয়ে দেখি, তারা রেস্টুরেন্ট রেস্টুরেন্ট খেলছে। প্লেটে একটা রুটি আর ডিম ভাজি করে দেওয়া হয়েছে। রেস্টুরেন্ট স্টাইলে অবন্তিকে চেয়ার টেনে বসতে দেওয়া হলো। বাবার কাজকর্মে খুব খুশি হয়ে, হাসি হাসি মুখে সে চেয়ারে বসলো। এখনো খাওয়া শুরু করেনি। আমি জানি, শেষ পর্যন্ত আমি নড়াচড়া না করলে বের হওয়া হবে না। সোহান কিছু থালাবাটি ধুয়েছে, বাকিগুলো আমি ধুয়ে, দু'কাপ চায়ের পানি বসালাম চুলায়। অবন্তি কখনোই নিজের খাবার নিজে খাবে না, তাই আমিই তাকে খাওয়ানো শুরু করলাম। সোহান আমার আশেপাশে ঘুরাঘুরি করে বোঝার চেষ্টা করছে, আমি আসলে যেতে পারবো কিনা। সারা সপ্তাহ অপেক্ষা করি আমরা ছুটির দিনে বের হবো, সেখানে মাথাব্যথা বলে বাসায় থাকতে হবে সেটা আমি কোন ভাবেই চাই না।
ভ্রমণের চ্যালেঞ্জ
পরিবার নিয়ে ভ্রমণের সময় প্রায়ই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় - শিশুদের স্কুল, স্বাস্থ্য সমস্যা, সময় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। এই পর্বে লেখিকা মাইগ্রেনের সমস্যা সত্ত্বেও ভ্রমণে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যা অনেক পরিবারের জন্য পরিচিত একটি অভিজ্ঞতা।
মোসির পথে: আরুশা থেকে যাত্রা
সোহান মোসি শহরের একটা হোটেলের রুম বুক করেছে। হোটেলটার অনলাইন রিভিউ খুবই ভালো। হোটেলের ছাদ থেকে কিলিমাঞ্জারো দেখা যায়। যেহেতু আমার মাথা ব্যথা; আমরা হোটেলে যাবো, রেস্ট করবো, খাওয়া-দাওয়া করে হোটেলের ছাদে বসে কিলিমাঞ্জারো দেখে চলে আসবো। সবকিছু গুছিয়ে রওনা দিতে দিতে ১১ টা বেজে যায়। এই প্রথমবার আমরা আরুশা শহরের বাইরে যাচ্ছি। আমাদের গাড়িতে এখনো স্পেয়ার চাকা লাগানো। সোহানের ভাষ্যমতে এবার সে খুব সাবধানি কারণ যাত্রার শুরুতে সে গাড়ির চাকার প্রেশার চেক করে নিবে। এই রাস্তা দিয়ে সোহান নিয়মিত কলেজে যায়, তাই সে জানে কোথায় যাওয়া লাগবে। প্রেশার চেক করে, পেমেন্ট করে সোহান গাড়িতে বসলো। জানতে চাইলাম, 'কত দিলে?' সে বললো, ৫০০০ শিলিং। ৫০০০ মানে হলো ১৮০ টাকা। আমি বললাম, দেশে তো ২০ টাকাতেই এই কাজ হয়ে যায়। সোহান বলে, 'ব্যাটা তো টাকা নিয়ে আর ফেরত দিল না!' এখানে এসে শিলিং টাকা হিসাব মিলাতে মিলাতেই অনেক শিলিং খরচ হয়ে যায়। পরে মনে হয় এইটা কি হলো, এত টাকা নিল কেন!
আমাদের যাত্রা শুরু হলো। আরুশা ভয়ানক সুন্দর শহর। মনে হবে মালভুমির উপরে আছি। রাস্তার দুপাশ দিয়ে অনেক খানি ঢালু ভূমি, সেখানে আবার নানারকম গাছ বড় হয়ে রাস্তার উচ্চতা ছাড়িয়ে গিয়েছে;তখন আর বুঝতে পারা যায় না, পাহাড়ের উপরের রাস্তা দিয়ে চলছি। রাস্তার দুপাশে অনেক প্রাচীন গাছ; কোন উঁচু বিল্ডিং নাই, বেশিরভাগ এক/দোতলা বিল্ডিং, উপরে নানারঙের টিনের চাল, দেখতে ভালো লাগে। আমাদের দেশের মতো খুব জাক-জমকপূর্ণ কোন শপিংমল বা দোকানপাট নাই। একদম নাই, সেটাও না, কিন্তু বেশিরভাগ দোকানপাট খুব সাধারণ চারকোনা ঘর তুলে বানানো হয়েছে; আমাদের দেশে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে দোকানপাট যেমন। পলিথিন দিয়ে বানানো দোকানও রয়েছে। অবশ্য কয়দিন পর দেখলাম অস্থায়ী সব দোকান ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, কারন তাদের প্রেসিডেন্ট বলেছে আরুশা টুরিস্ট সিটি, এখানে রাস্তার পাশে এমন দোকান থাকবে না। তারপর থেকে আরুশাতে এমন দোকান পাট কমে গিয়েছে।
হোয়াইট হাউজ হোটেল: কিলিমাঞ্জারোর অপেক্ষা
আমরা আরুশা শহর থেকে বেরিয়ে মোসি শহরে যাওয়ার হাইওয়েতে আছি। বায়ে বা ডানে যেদিকেই তাকাই না কেন, চোখ আটকায় না। মাঝখানে দীর্ঘ সোজা রাস্তা। রাস্তা এত বিস্তৃত দূর সীমানায় রাস্তার ঢেউ খেলানো দেখা যায়। আমার কাছে মনে হয়েছিল, এই রাস্তায় ঘুরোঘুরি করে আবার বাসায় ফেরত যদি চলে যাই, তাও দুঃখ থাকবে না। চোখ ও মন দুটোরই প্রশান্তি মেলে এখানে। আবার এরকম রাস্তায় চললে নিজের দেশের কথা মনে হয়, কত ছোট একটা দেশ আমাদের। আমরা দিগন্তে চোখ মেলতে পারি না, আমাদের শিশুদের খেলার মাঠ সেই কবে দখল হয়ে গিয়েছে। আমরা স্বপ্ন দেখি বুড়ো বয়েসে একটা ১২০০ বর্গফুটের বাসার মালিক হবো!!
মোসি শহরের একটা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পার হয়ে, আমরা একটা কাঁচা রাস্তায় চলে আসলাম। এখন একটা গ্রামের পথ দিয়ে চলছি। রবিবার এখানে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা চার্চে যান, বড় সুন্দর একটা চার্চের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় চার্চ ফেরত মানুষেরা হেঁটে যাচ্ছে। গুগল ম্যাপ আমাদের নিয়ে গেল একদম গ্রামের ভেতর। শীত শীত আবহাওয়া বলে দুপুর সাড়ে বারোটার সময় গ্রাম থেকে মোরগের ডাক শোনা যাচ্ছে। অল্প একটু জায়গার উপর চারতলা বিল্ডিং নাম হোয়াইট হাউজ। করোনার জন্য সবার ব্যবসাতেই মন্দা যাচ্ছে। হোটেল একদম খালি মনে হলো। বড় মেয়ে অনেকক্ষণ থেকে ওয়াশরুমে যেতে চায়। গাড়ি থেকে নেমে আমি দুই মেয়ে নিয়ে ওয়াশরুম খুঁজতে বের হলাম। এই বিদেশ বিভূঁইয়ে ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় প্রথমেই মনে হয়, পানি ব্যবহার করা যাবে তো!! হোটেলের একজন কর্মী, আমাদের হোটেলের পেছনের দিকের একটা পথ দেখিয়ে দিল। ওখানে গিয়ে দেখি হোটেলের রেস্টুরেন্ট সেইটা। একজন ইউরোপীয় কাস্টমার একটা টেবিল দখল করে আছেন। ওয়াশরুম পরিস্কার ছিল, পানিও ছিল। ওখান থেকে আবার সোহানের কাছে রিসিপশনে আসলাম। আমাদের দেখে সোহান বললো, কিছু খাবা?? এই বলে একটা দরজা খুললো, দেখি সেই রেস্টুরেন্ট। মেজাজটা কেমন লাগে, তাইলে আমাদের ওতো ঘুরিয়ে ওখানে নিল কেন?
ওয়াল্টারের সাথে পরিচয়: স্থানীয় গাইড
আমাদের মেনু দেখতে বলে, সোহান কথা শেষ করতে গেলো। একটু পর এসে বলে, আজকে তো মেঘ আছে, তাই কিলিমাঞ্জারো দেখা যাবে না। তাই রুম নেই নাই। এখানে লাঞ্চ করে ধারে কাছে ঝর্ণা দেখতে যাবো। খাবার অর্ডার করে, সোহান তাদের বললো, আমরা ছাদে থেকে ঘুরে আসি এর মাঝে তোমরা খাবার তৈরি করতে থাকো। তারা জানালো ছাদেই খাবার সার্ভ করবে। শুনে আমরা খুশি মনে ছাদে চলে গেলাম। চারদিকে সবুজ গ্রাম দেখা যায় ঠিক আমাদের গ্রামগুলোর মতো। চারপাশে বেড়া দেওয়া কুড়ে ঘর আর টিনের ঘর। ঘরের সামনে সুন্দর করে বাগান করেছে। বাহারি রঙের ফুল সেখানে। সোহান আকাশের দিকে আঙুল দিয়ে বলল, মেঘ না থাকলে এখানে দেখা যেত কিলিমাঞ্জারো।
ছাদে এসে আলোতে আমার তাকিয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছিল। মাথাব্যথা টের পাচ্ছিলাম। টেবিলে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করেছিলাম। আর মেয়েরা মোবাইল গুঁতানো শুরু করলো। সব দেখে সোহানের অতিশয় অভিমান হলো, আমি এত কষ্ট করে তোমাদের ড্রাইভ করে নিয়ে আসলাম, আর তোমরা মোবাইল দেখছো। কিছুক্ষণ বাবা মেয়েদের অভিমান পর্ব চললো। বাবার মান ভাঙানোর জন্য তারা অনেকগুলো ছবি তোলার জন্য পোজ দিল। যাইহোক আমিও বুঝতে পারলাম, বেড়াতে এসে মাথাব্যথা নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। ঝিকে মেরে সোহান বউকে শেখাতে চাচ্ছে।
তানজানিয়ার বৈচিত্র্য
তানজানিয়া খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়া সত্ত্বেও এখানে মুসলিম প্রেসিডেন্ট এবং মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট রয়েছে, যা দেশটির ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পরিচয় দেয়। দেশটিতে ১২০টিরও বেশি উপজাতি বসবাস করে যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থাকে।
এদিকে খাবার আর দিয়ে যায় না, সোহান একবার নিচে গিয়ে তাড়া দিয়ে আসলো। এর মাঝে দুজন লোক আসলো, সোহান হোটেল থেকে একজনকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে গাইড হিসাবে, সে ব্যাপারেই তারা কথা বলে গেলো। কিছুক্ষন পর দুই বাটি স্যুপ নিয়ে আসলো, দেখতে ডালের মতো। ক্ষুদায় সোহান, সেবন্তি সেটাই মজা করে খাচ্ছে। এর মাঝে মেইন খাবার চলে আসলো। ফ্রুটস সালাদ দিয়ে গেল। ওদের ফ্রুটস সালাড হলো সব ফল বড় বড় কেটে একটা প্লেটে দেওয়া। ফল খেতে ভালো লাগছিল। তরমুজ, আম, আনারস আর কলা ছিল। তরমুজটা মিষ্টি দেখে সোহান ওয়েটারকে বললো, সে এরকমই একটা তরমুজ নিয়ে যেতে চায়। ব্যাটা বুঝতে পারার ভাব ধরে চলে গেলো। সোহান বললো, তোমরা গুছিয়ে নাও সবকিছু, আমি নিচে গিয়ে বিল দিয়ে আসি। সোহান নিচে যাওয়ার সময় দেখে, সেই ওয়েটার একবাটি তরমুজ নিয়ে উপরে উঠছে। ভাষা বিভ্রাটে তার মনে হয়েছে, আমরা এখনি আরো তরমুজ খেতে চাই, তাই তরমুজ কেটে উপরে আসছিল সে। কি আর করা, সোহান তাকে তরমুজ প্যাকেট করে দিতে বললো। সব কিছু শেষ করে আমরা আবার গাড়ি নিয়ে রওনা হলাম।
ম্যাটেরুনির পথে: বিপদসংকুল যাত্রা
আমাদের সাথে এবার আছে ওয়াল্টার নামে হালকা পাতলা আকারের একজন তানজানিয়ান। সে হোটেল মালিকের ছেলে, ভালো ইংরেজি পারে। আমাদের গাড়ি আবার গ্রামের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, এর মাঝে তার সাথে কথা হচ্ছে। আমরা এখানে নতুন বলে, সবই ভালো লাগে, দেশের সাথে মিল পেলে আরো বেশি ভালো লাগে। তানজানিয়ার রাস্তায় লোকজন দেখলে নিজের দেশের মানুষের কথা মনে হয়। ওয়াল্টারকে নিয়ে যখন যাচ্ছিলাম, তখন নানারকম কথাবার্তা চলছিল। ওয়াল্টার কেনিয়াতে পড়াশোনা করেছে একাউন্টিংয়ে। সে প্রথমে আমাদের ইন্ডিয়ান ভেবেছিল। সে কিছু কিছু হিন্দি শব্দ জানে। কথায় কথায় সোহান বললো, তোমাদের এখানে অনেক মুসলিম দেখা যায়। ওয়াল্টার জানালো আমরা সহবস্থানে বিশ্বাসী। ধর্ম কোন বড় বিষয় নয়। জানিয়ে রাখি তানজানিয়া খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এবং তাদের প্রেসিডেন্ট একজন মুসলিম এবং মহিলা। আমরা চার্চ পেরিয়ে আবার পাকা রাস্তায় উঠলাম। ইট পাথর, বিল্ডিং দেখে বড় হওয়া আমরা মাঠ দেখে মুগ্ধ হই, গাছ দেখে মুগ্ধ হই, গাছের পাতার সবুজ দেখে ভাবি, আল্লাহর কাছে কতরকমের সবুজের শেড আছে!! তানজানিয়া অনেক বেশি সবুজ একটা দেশ।